চাঁদগাজী ভূঁঞা মসজিদ
ফেনীর ছাগলনাইয়া থানার বিভিন্ন স্থানে বহু প্রাচীন কীর্তি বিদ্যমান। এসব প্রচীন কীর্তির মধ্যে মসজিদ, মন্দির, ইটের নির্মিত দালান, মাজার, দীঘি, রাস্তা, পাথর, প্রাচীন বৃক্ষ অন্যতম। মোঘল ও নবাবী আমলে নির্মিত এসব প্রাচীনকীর্তির পাশাপাশি ত্রিপুরার শাসক “ভাটির বাঘ” শমসের গাজীর সময়ে নির্মিত ও প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন স্থাপত্য কীর্তিও এএলাকার গৌরব হিসাবে কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে। ছাগলনাইয়া থানার চাঁদগাজী এলাকা মোগল আমলে বেশ উন্নত ছিল।এখানেই রয়েছে তিনশত বছরের পুরোনো চাঁদগাজী ভূঁঞা মসজিদ।চাঁদগাজী ভূঁঞা ছিলেন মোগল আমলে ফেনীর পূবর্অঞ্চলে এক স্বনামধন্য জমিদার। জানা যায়, আঠার শতকের গোড়ার দিকেতিনি প্রথম নদী ভাঙ্গনের কারণে প্রচুর ধন-সম্পদ ও লোকলস্করসহ দুরদেশ থেকে এসে বতর্মান ছাগলনাইয়ার মাটিয়াগোধাগ্রামে বসতি স্থাপন করেন।
সাত মন্দির
ছাগলনাইয়ায় ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য শিল্পের নিদর্শন হিসেবে সাত মন্দির ঘোষণা করছে নিজের অস্তিত্ব।ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার পশ্চিম ছাগলনাইয়া গ্রামে এটি অবস্থিত। নিজ চোখে না দেখলে উপলব্ধিকরা যাবেনা এর অপুর্ব সৌন্দর্য্য।ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনীতি যখন সংকটময় মুহুর্ত অতিক্রম করছে। যখন ম্যার জন শোরের পর লর্ড মনিংটন অর্থ্যাৎলর্ড ওলেয়েসলী গভর্ণর জেনারেল হয়ে ভারতে আগমন করেন, ঠিক তখনই ফ্রান্সের সাথে ইংল্যান্ড এক মহাযুদ্ধে লিপ্ত হয়।নেপোলিয়ন বোনাপার্টের দিগি¦জয় এবং তার ভারত বিজয়ের কল্পনায় ইংল্যান্ড সস্ত্রস্ত; ভারতের পেশোয়া, সিদ্ধিয়া, হোলকার ও নিজাম
বাংলার বীর শমসের গাজী
বৃটিশ শাসনের আগে ভারতীয় উপমহাদেশে (তথা ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ) মুসলীম শাসকরাই রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন।তাদের মধ্যে বাংলার বীর শমসের গাজী অন্যতম। তার জম্মস্থান ছিল ফেনী জেলার ছগলনাইয়া উপজেলা, শুভপুর ইউনিয়ন এর সোনাপুর গ্রামে । এই জম্মস্থানছিল বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে পড়েছে। এখানে তার স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক সুরঙ্গ পথ, শমসের গাজী দিঘী, এবংতারই খনন করে তৈরী করা এক খোইল্লা দিঘীসহ প্রবেশ পথ, বসত ঘরের চিহ্ন হিসাবে পড়ে আছে। এটি ভারত ও বাংলাদেশসীমান্তবর্তী পাহাড়ে। শমসের গাজীর বসত ঘরের দঃ পূর্বে যে দিঘী রয়েছে তার নাম শমসের গাজী দিঘী। এই দিঘীতে তারস্ত্রী সহ গোসল করতেন। স্ত্রী ছিলেন পদা শীল। শমসের গাজী পর্দাকে পছন্দ করতেন । স্ত্রীর পর্দার জন্য এই সুরঙ্গপথটি তৈরি করেন। যাতে তার সৌন্দর্য্যরে প্রতি কারও দৃষ্টি না পড়ে। সে জন্য এ পথে দিঘীতে যাওয়া আসা করতেন।
শুভপুর ব্রীজ
ছাগলনাইয়ার প্রাচীন স্থাপত্য শিল্পের আরেকটি অন্যতম নিদর্শন ফেনী নদীর উপর নির্মিত শুভপুর ব্রীজ।১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের অনেক স্মৃতির সাথে জড়িত এই ব্রীজটি থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধকরেছিল অনেক বীরযোদ্ধা। এর চার পাশে রয়েছে অফুরন্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য।
ছাগলনাইয়া প্রকৃতির আরেক দর্শনীয় স্থান কৈয়ারা দিঘী। উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের দারোগার হাট বাজারের উত্তরেবিশাল এ দিঘী। এখানকার প্রচলিত এক প্রবাদেই সাক্ষ্য মিলে দিঘীর অবস্থা।
জগন্নাথ কালি মন্দির
শমসের গাজী তার বাল্যকালের লালন কর্তা জগন্নাথ সেনের স্মৃতিতে একটি মন্দির ও কালি মূর্তি নির্মাণ করেন।মূর্তিটি ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর বাসস্ট্যান্ড’র পূর্ব পার্শ্বে অবস্থিত। জগন্নাথ মূর্তির দর্শনীয় বিষয় হচ্ছে, এর দুইনেত্র প্রকোষ্ঠে বসানো লাল বর্ণের পাথর। অন্ধকারে পাথরগুলো আলো বিকিরণ করে। প্রতিদিন দুর-দুরান্ত থেকেদর্শনার্থীরা এটি দেখতে আসে।
শিলুয়ার শীল
সাবেক রতননগর পরগনার একস্থানে উনিশ শতকের একটি শিলা দেখা যায়।এই শিলাটি প্রাচীন কীতিগুলোর মধ্যে অন্যতম।এই শিলা থেকে ঐ স্থানের নামকরণ হয় শিলুয়া। এটি ছাগলনাইয়া হতে ৫-৬ মাইল পশ্চিমে কন্ট্রাক্টর মসজিদ বাজার হতেপ্রায় ৩ কিঃমিঃ দক্ষিণে মধ্যম শিলুয়া চৌধুরীবাজারের ৫০ গজ পশ্চিমে ও শিলুয়া চৌধুরী বাড়ীর পূর্ব পার্শ্বেছায়াসুনিবিড় স্থানে শীলটি অবস্থিত । ঐ স্থানটির চার পাশে লোহার পিলার ও কাটা তার দিয়ে ঘেরাও দেওয়া। এই স্থানেবৃক্ষরাজি ছায়াচ্ছন্ন স্থানে দর্শনার্থীদের বসার জন্য দুটি বেঞ্চ আছে। পাথরটি ত্রকটি টিন ও কাঠের চৌচালা ঘরদিয়ে আচ্ছাদিত।